আমলকী
আমলকী একটি পরিচিত ভেষজ ফল। বহু আগে গ্রামঞ্চলে
আমলকীর গাছ দেখা যেত আরণ্যেক গাছ হিসাবে। আর্থাৎ কেউ এই গাছ রোপন করত না।এর
কবিরাজি নাম ধাত্রী ফল। ভারতের উত্তর প্রদেশে এই গাছ বেশি দেখা যেত।
আমলকী গাছের
পাতা দেখতে তেঁতুল পাতার মত। দুই জাতের আমলকী দেখা যায়।–
১. বড় আকারে।
২. ছোত আকারে।
বড় আকারের গাছ অনেকে রোপন করে । ছোট-বড় যেমনই হোক
এর গুণ একই।এর বোটানিক্যাল নাম (Emblica
Officinalis Gaertn ).
বিভিন্ন রোগ নিরামইয়ে আমলকী ব্যবহার হয়ে আসছে
অনাদিকাল ধরে। এ ফলটির নাম নিলে সাথে আরো দু’টি ফলের নাম এসে যায় –
১. হরীতকী
২. বহেরা
ত্রিফলা বলা হয়। এই ত্রিফলা ত্রিদোষনাশক ফল।
যক্ষা , বায়ুপিত্ত ও কফ।
কবিরাজি মতে, এই তিদোষই সব রোগের উৎস।
আমাদের আলোচ্য আমলকী।আমলকী অম্লপ্রধান হলেও
মধুর,তিক্ত,কষায়,কটু ও লবণ রসকেও ধারণ করে। তাই কেউ কেউ এ ফল কে অমৃত ফলও বলে।
আমলকী বায়ুনাশক। প্রস্রাব পরিস্কারক। যাদের পেটে
বায়ু উৎপন্ন হয় তারা কাঁচা আমলকী চিবিয়ে খেতে পারেন উপকার পাবেন। যাদের দাত নেই
তারা আমলকী বেটে তল পেটে লাগান। পেটে বায়ূগ্যাস হবে না। যারা চিবিয়ে খাবে ,তাদের
প্রস্রাব সম্পূর্ণ বেরিয়ে যাবে। পেট বর্জ্যমুক্ত হবে। যেসব মহিলার শ্বেতপ্রদর আছে।
তারা দেড় গ্ল্যাস আমলকী চূর্ণ তিন-চার ফোটা মধু মিশিয়ে দুই বেলা খান, উপকার পাবেন।
যারা অনিদ্রায় ভুগছেন, তারা দ-তিনটি আমলকীর বিচি ফেলে দিয়ে বেটে কাঁচা দুধের সাথে
খান। সুনিদ্রা হবে।
ডায়াবেটিস রোগীরা রোজ দু-তিনটি আমলকী চিবিয়ে বা
রস করে খান। উপকার পাবেন।
প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রনা করলে চার তোলা আমলকীর
রস,আধ পোয়া খাঁটি কাঁচা দুধ অ অল্প মিসরি চূর্ণ মিশিয়ে শরবত বানিয়ে কপ্রতিদিন
সকালে সাত দিন খান। জ্বালা-যন্ত্রনা কমে যাবে ।পেস্রাব খোলাসা হবে।
আমলকী দুই ভাবে ব্যবহার করা যায়।সারা বছর কাঁচা
আমলকী পাওয়া যায় না বিধায় যখন পাওয়া যায় তখন কেটে চূর্ণ করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ
করা হয় । এই শুকনো আমলকীও সমান উপকারী।কবিরাজের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবহার করে আমরা
আমলকীর দ্বারা যথেষ্ট উপকৃত হতে পারি।
0 Comments