মায়া -- রণি'র গল্প

মায়া -- রণি'র গল্প

-- মায়া  --
মুঃ সাইদুল শিকদার রণি 

আজ পুষ্পার বিয়ে হল। খুব ঘটা করে, খুব আমোদ ফুর্তি  করে। পরিশেষে কান্না দিয়েই পুষ্পাকে বিদায় নিতে হল। মনটা খারাপ হলেও ভিতরে ভয়ে আচ্ছন্নে তা বোঝা গেল না। গাড়ী গেটে আসতেই শোনা গেল চারদিকে হৈ হুল্লোর। ‘বউ এসেছে বউ এসেছে’ বলে বাচ্চারা দৌড়ে আসছে গাড়ীর কাছে । খুব যত্ন করে বরণ করা হল ওকে। দোতালা বাড়ী। দোতালায় তিনটা ঘর। সবচেয়ে শেষের ঘরটায় বসানো হল ওকে। প্রথম ঘরে থাকেন পুষ্পার শুশুর । মজিবর সাহেব। হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি । এখন অবসরে আছেন। শেষের ঘরটা সাগরের(পুষ্পার বর সাগর)। আর মাঝের ঘরে থাকেন ঊষা। ঊষা সাগরের ভাবি। সাগরের বড় ভাই সবুজের স্ত্রী। বিয়ের দেড় বছরের মাথায়,একটি দুর্ঘটনায় মারা যায় সবুজ। সবুজ সাগরের মাত্র এক বছরের বড় ছিল। দুর্ঘটনাটা কেউ মেনে নিতে পারেনি। তাই এরা ঊষাকে বাপের বাড়ী যেতে দেয়নি। রাত্রী বাড়ার সাথে বাড়ীর ভীড় কমে এসেছে। হৈ-হল্লোরও শোনা যাচ্ছে না। ঘরে পুষ্পা একা। ওর খুব গরম লাগছে। শরীর ভর্তি গহনা। খুলতেও পারছে না। আবার ঘোমটা দিয়েই বসে আছে পুষ্পা। মাথার উপরে ফ্যান ঘুরছে। তাও ওর শরীর বেয়ে ঘাম পড়ছে। ঘোমটা খুললে যদি কেউ দেখে ফেলে। তাহলে তো লজ্জা। এই ভেবে ঘোমটাটা ও ফেলতে পারছে না ও। অনেক ক্ষণ হল ও একা বসে আছে। কেউ আসছেও না এদিকে। সময়ও যেন আর চলতে পারছেনা। মনে হচ্ছে হাপিয়ে পরেছে ঘড়ির কাটা। প্রতিটি মুহূর্ত যেন বলে বলে যাচ্ছে,‘আমায় এবার রক্ষা করো।’ বেশকিছুক্ষণ পর পায়ের শব্দ শোনা গেল। নড়ে বসল পুষ্পা। ঘরে ঢুকলো ঊষা। টিয়া কালারের শাড়ী পরায় ওকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। হাতে একটি থালা। এসে বিছানায় বসলো। তাতে কিছু মিষ্টি। পুষ্পা তখনো মাথা নিচু করে রইল। ঘোমটাটা একটু সরিয়ে দিলো ঊষা। পুষ্পা মাথা আরো নিচু করল।
-কি গো এখনো ঘোমটা দিয়ে থাকলে চলবে? নাকি কিছু খেতে হবে।
বলে থালাটা সামনে এগিয়ে ধরল। মাথা তুলল না পুষ্পা।
-আহারে লজ্জাবতী। লজ্জায় একেবারে খাওয়াই ভুলে গেছে। একটু পরে দেখা যাবে কোথায় থাকে লজ্জা। তা উনি কোথায় গো?
- জানি না।
আস্তে করে জবাব দিল পুষ্পা। এই প্রথম মুখ খুলল ও।
-ও ,তা উনি একবার ও আসে নি এদিকে?
এবার আর পুষ্পা মুখে কিছু বলল না। দুদিকে মাথা নাড়লো।
-আহারে বেচারা, একটি বারও বউয়ের কাছে আসার চান্স পেল না। তুমি চিন্তা কর না গো। আমি পাঠিয়ে দিবোনে।
বলে মুচকি মুচকি হাসতে লাগল ঊষা। কথাটা শোনার পর কেমন যেন লাগল পুষ্পার। লজ্জায় লাল হয়ে গেল ওর মুখ। শরীরে কেমন যে শিহরণ বয়ে গেল। লজ্জায় কোনো কথাও বলতে পারলো না ও।
-কি গো লজ্জা পেলে নাকি? নেও খেয়ে নেও। পরে তো আবার খেতেও পারবেনা।
বলে আবার হাসতে লাগল। আবার বলতে শুরু করল-
-কি বর আসলে কি কি করতে হয় জানতো? না কি আবার ভয় পাবে? না পারলে বল আমি শিখিয়ে দিবো।
লজ্জায় পুষ্পা আরো ঘুটিয়ে গেল । মাথা নিচু। কিছু বলতেও পারছে না। ও কখনো এই ধরণের মশকারি কথা শুনিনি আগে। ও মাথা নিচু করে চিন্তা করছে । ও কি বলবে, ‘ভাবি আমার খুব ভয় করছে ।’ নাকি এও শুনে আবার মশকারি করবে কে জানে। তাই চুপ করে রইল। কিছুই বলল না।
-আচ্ছা তুমি কেমন মেয়ে গো ? আমি এতো কথা বললাম । আর তুমি কিছুই বলছো না। কি কোন সমস্যা?
পুষ্পা মুখে কিছুই বলল না । শুধু মাথা নাড়ল।
-তাহলে এবার গহনা গুলো ত খুলো। ঘামিয়ে তো একাকার হয়ে গেছো।
-পরে ভাবি।
-অ, বরকে দেখাবে। বলে ঊষা আবার একটু হাসলো । আচ্ছা তাহলে আমি এবার যাই।
ঊষা উঠতে যাবে তখন পুষ্পা হাত ধরল ওর।
-আর কিছুক্ষণ থাকো না ভাবি। একা একা ভাল লাগে না।
-ও , কিছুক্ষণ পর তো আমাকে তারিয়ে দিবে। তখন তো আর বলবে না ভাবি থাকো না একটু।
-যাও, কি সব বলো না তুমি।
-এখন তো কি সবই হবে,  দেখা যাবে ।
-যখন দেখা যাবে তখন । এখন তো বসো।
-আচ্ছা বসলাম।
এভাবে দুজন মশকারি করতে করতে অনেক সময় কেটে গেল। পুষ্পাও এখন সহজ হয়ে গেল। হঠাৎ দরজার কাছে কাশির শব্দ হল। আবার ঘোমটা দিয়ে মাথা নিচু করল পুষ্পা।

সাগর বেশকিছুক্ষণ আগে এসে দাড়িয়েছে দরজায়। শব্দ না করে শুনছিল পুষ্পাদের কথা । কিন্তু যতই রাত বাড়ে, মেয়েদের কথা ততই বাড়ে। যখন দেখলো রাত বাড়ছে,তখন কাশি দিয়ে তার উপস্থিতি জানালো সে। ঘড়ি দেখে চমকে উঠল ঊষা। রাত অনেক হল। তার তো খেয়ালই নেই। গল্প করেই যাচ্ছে তো করেই যাচ্ছে।ঊষাই প্রথম কথা বলল-
-কি বাহিরে দাঁড়িয়ে কাশছো কেন? গলায় কি ব্যংগ আটকিয়েছে?
-না তা নয়। 
-তা হলে , তর সইছে না?  বলে ঊষা মুচকি হাসান। 
-ভাবি ভাল হচ্ছে না কিন্তু।
-বুঝেছি বুঝেছি। এখন তো নতুন বউ পেয়েছো। আমারা তো পুরানো হয়ে গেছি।
-ভাবি। 
-আচ্ছা বাবা বের হচ্ছি। পুরুষ মানুষ। এদের দেরি সহ্যই হয় না।
ঊষা ঘর থেকে বের হয়ে গেল। যাওয়ার সময় সাগরকে ঘরের দিকে ঠেলে দিয়ে গেল। 
-চললাম । তোমার বউ কিছু খায় নি। মিষ্টি আছে খাইয়ে দিও। আবার না খাইয়ে  রেখো না। 
সাগর ঘরে ঢুকলো। দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে বিছানার কাছে আসলো। জানালা দিয়ে জ্যোস্নার আলো আসছে। তাতে ঘরের সব দেখা যাছে। ফুল দিয়ে সাজানো খাটের মাঝে পুষ্পা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে। পুষ্পা একটু সরে বসলো। সাগর পুষ্পার দিকে একটু চেপে বসলো। পুষ্পা চাপতে চাপতে খাটের কিনারায় চলে এসেছে। ও আর সরতে পেরছে না। পুষ্পা মাথা নিচু করে আছে। মাথায় ঘোমটা । সাগর পুষ্পার ঘোমটা টা সরাল। চিবুক ধরে মাথাটা একটু উচু করল। পুষ্পার চোখ দুটি বন্ধ।
-কি তুমি নাকি খাওনি? সত্যি?
পুষ্পা কিছু বলল না। আবার মাথা নিচু করে ফেলল। তবে এবার মাথায় ঘোমটা নেই। সাগর মিষ্টির থালাটা থেকে একটি মিষ্টি তুলল। 
-এতোক্ষণ তো অনেক গল্প করলে। এখন আবার মাথা নিচু করে রেখেছো কেন?
আমি কিন্তু সব কথা শুনেছি। 
-আপনি এত খারাপ কেন?  মাথা নিচু রেখেই বলল পুষ্পা।
-আমি আবার কি করলাম ?
-এই যে আড়ি পেতে অন্যেদের কথা শুনছিলেন। 
-অ। এই কথা। তা একটু শুনতে হয় না, তোমরা কি কি বল?
-মেয়েদের কথা এতো শুনার কি আছে? 
-না শুনলে বুঝবো কেমন করে?
-কি?
-কি আবার ? আমার বউয়ের মন।
-বাজে কথা বলেন না। এতক্ষণ কোনো খোজ ছিল না এখন আসছে। 
-এতোক্ষণ তো আসিনি ,তোমারা কথা বলছো তাই।  
-হইছে আর অজুহাত দেখাতে হবে না। 
-কই! দেখ আমার হাত দু’টো । কোনো অজু হাত নেই। বলে দুহাত বাড়িয়ে দিল সামনে।
-তাই না শয়তান । দেখাছি ...। 
বলে হাত বাড়িয়ে কিল দিতে গেল পুষ্পা। হাত ধরে ফেলে সাগর। ধরে রাখে ছাড়ে না।
-ছাড়।
-না।
-কেউ এসে পরবে।
-কেউ আসবে না। হাত ছাড়তে পারি এক শর্তে।
- কি শর্ত?
-এখন খাইয়ে দিব। চুপ করে খেতে হবে।
- না খাবো না।
-তাহলে হাতও ছাড়বো না। 
বলে মিষ্টির হাত বাড়িয়ে দিল পুষ্পার দিকে। প্রথমে পুষ্পা লজ্জায় খেতে চাইলো না।
-কি হল নেও?
এবার মুখ অল্প হা করল। মিষ্টির হাতটা বাড়িয়ে দিল সাগর। আচমকা একটা শব্দ হল । দুজনে একসাথে তাকাল শব্দ লক্ষ করে। জানালার পাশ থেকে একটা কালোছায়া সরে গেল। 
-কে ? কে ওখানে? 
সাগর জানালার কাছে আসে। কেউ নেই। আকাশের দিকে তাকায়। জ্যোস্না রাত। এই রাতে চাঁদের বুকে মেঘ, বড়ই বেমানান।

রাত দেড়টা। ঘুম ভেঙে গেল সাগরের। বারান্দায় এসে দাড়াল সে। বাহিরে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। ওর শীত শীত লাগছে।  ঘরে ফিরতে গেল। আচমকা দেখল দোলনায় কে যেন বসে আছে। কাছে গেল ও। ঊষা বসে আছে।
-এতো রাতে ! ঘুমাও নি? 
-না । ঘুম আসছে না। 
-মন খারাপ? কিছু চিন্তা করছো? 
কোনো জবাব দিল না উষা। উল্টো প্রশ্ন করল-
-তুমি এতো রাতে এখানে? ঘুমাও নি কেন? 
-ঘুম ভেঙ্গে গেল। ভাল লাগছি না তাই - 
-বউ কি ঘুমাছে? 
-হা। 
-তোমার বউ সুন্দরী। ভাল মেয়েও। কন্ঠ ভারী হয়ে আসছে। ঊষার। 
-জানি। কণ্ঠস্বর খাদে নামিয়ে বলল সাগর। 
-তোমার পছন্দ হয়েছে? 
সাগর কোনো জবাব দিল না। দুজনেই চুপ করে আছে। ঠান্ডা বাতাস। কিন্তু পরিবেশটা যেন কেমন লাগছে। সাগর চাঁদের দিকে তাকিয়ে। ভাবছে চাঁদটা কত সুন্দর! কিন্তু তার পাশে যে কালোমেঘ । কিছুক্ষণ পর পরই কালোমেঘে ঢেকে দেয় অপূর্ব এই মাধূর্যকে। কি মনে করে সাগর উষার দিকে তাকাল। চাঁদের আলোয় উষার গালে চিক চিক করছে অশ্রু। সাগর উষার পাশে বসল। ডান হাতটা উষার কাধে রাখল। অন্য হাত দিয়ে চিবুকের জল মুছে দিচ্ছে। ও যত মুচছে ততই যেন অশ্রু আরো গড়াছে। যেন হেমালয়ের বরফ গলে জল পরছে।  
-কেঁদো না। সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি তো এখনও আছি। চলে তো যাই নি।
-কোথায় ? কোথায় আছো তুমি? আসলে কি জানো ? পৃথিবীর সবাই স্বার্থপর। একে একে সবাই চলে যাবে। কেউ থাকবে না কারো জন্য। 
দুই চিবুক দিয়ে এখনও অনবরত জল পড়ছে। কিছুক্ষণ থেমে আবার বলতে শুরু করল। 
-এই পৃথিবীতে মায়া বড়ই জটিল। মায়ার নেশা বড় খারাপ নেশা। যে মায়ায় জড়িয়ে পড়ে, সে আর তার মায়া ছাড়তে পারে না। সবাই স্বার্থপর।
সাগর কিছুই বলতে পারল না। বলার ভাষাও তার নেই। সাগর জানে এটা আবেগ। কিন্তু এটা ঠিক? আসলেই কি মায়ার নেশা ছাড়া যায় না? সেও কি পারবে না? নাকি সেও এই মায়ার জালে আটকা পরতে চায় না। মায়ার জালে আটকা পরলে সব এলমেলো হয়ে যাবে। সব জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে সব। ধ্বংস হবে সোনার সংসার। কিন্তু কিভাবে সে ছড়বে ? কিভাবে সে রক্ষা পাবে?   
নিরবতা ভাঙ্গল উষা। সাগরের দিকে মুখ করে –
-সাগর ?
-হুম।
- তোমার কি মনে আছে আমার বিয়ের আগের কথা? 
-কোন কথা?  
- ঐ যে আম বাগানে। তোমার মনে নেই ! তুমি যে আমায় প্রথম চুমো খেয়েছিলে। মনে পড়ে? 
-ও হ্যা ।
-সেদিন তুমি আমায় ছুঁয়ে, কি কথা দিয়েছিলে তা মনে আছে?
-হা।
-তুমিও কি আমায় ছেড়ে চলে যাবে সাগর? ভুলে যাবে আমাকে?
সাগর কিছুই বলছে না দেখে, আবার কান্না শুরু করল ঊষা। সাগরকে আলতো করে ধাক্কা দিয়ে বলল-
-বল না তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাবে না তো? 
-না। কখনই না। বলে সাগর ঊষাকে জড়িয়ে ধরে। 
এই পৃথিবীতে মায়ার বেড়াজাল থেকে বের হওয়া অসম্ভব। কেউ না কেউ কারো মায়ার নেশায় বন্ধী।
-ছাড়বে না তো? উষা আবার জিজ্ঞাষা করল।
–না। 
-সত্যি তো? 
-হা । বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে উষাকে। 
এই পৃথিবী আসলেই বড় বিচিত্র। কে কি চায়? তা বুঝা বড়ই কঠিন। কেউ চায় একটু সুখ। কেউ চায় ভালবাসা। আবার কেউ চায় মাথার উপর একটু ছাদ । কেউ বা চায় সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে। আজব পৃথিবী। উষা সাগরের বুকে মাথা রেখে যে সুখ খুঁজছে। সাগর হয়তো তা খুঁজছে না বা চাচ্ছে না । আবার এও হতে পারে, সে কি চায় তা সে নিজেও জানে না। ঘরে নববধু । আর সাগর তার সাবেক প্রেমিকাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। সাগরের খুব খারাপ লাগছে। মনে খুব অপরাধবোধ হছে। ঘৃনা লাগছে নিজেকে। কিন্তু সে কি করবে? সে কোন দিকে যাবে ? তার দোষ কোথায়? একটি অসহায় মেয়েকে সে আশ্রয় দেওয়া। তাকে মাথা গোজার মত জায়গা দেওয়া কি  অন্যয়? নিজের ভালবাসার মানুষকে সুখী রাখত চায় সে। 
উষা কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে,খেয়ালই কোরেনি ও। খুব মায়া হয় এই ঘুমান্ত মুখে উষাকে দেখলে। খুবই কমল ওর মুখ। একটা আলাদা মায়া আছে এই মুখে। মনে হয় সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকি। না রাত অনেক হল । ঘরে যাওয়া উচিত। বাহিরেও ঠান্ডা বাতাস। তাই সাগর উষাকে পাজা করে কোলে নিল। উষার ঘরের দিকে যাবে। আচমকা চমকে উঠল সাগর । বারান্দায় কে যেন দাঁড়িয়ে আছে। উষাকে কোলে নিয়েই সামনে চলল সে। আসতে আসতে স্পষ্ট হচ্ছে। কাছে গিয়ে থমকে দাঁড়াল সাগর। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আর কেউ নয়। বধু সাজে পুষ্পা। 

******

⌂ মুহাঃ সাইদুল শিকদার রণি

Post a Comment

0 Comments