গুপ্ত ঘাতক-০২
॥চার॥
পুলিশ ভ্যান ও এমবুলেন্স পিছনে রিক্সা থামাল সাঈফ। ভাড়া মিটিয়ে পুলিশ ভ্যানের কাছে এল সাঈফ। সাঈফের মনে চিলিক দিয়ে উঠল। এখানে পুলিশ ভ্যান কেন? সাইমুম কি তাহলে ধরা খেয়ে গেল? না আবার এমবুলেন্স? নাকি সুইসাইড করল। রমনা থানার কর্মকর্তা ওসি কামরুজ্জামান দাঁড়িয়ে আছে। ওসির সামনে গেল সাঈফ।
“হ্যালো ওসি সাহেব। কেমন আছেন?” কামরুজ্জামান ও সাঈদ আগে থেকেই পরিচিত।
“আরে মি.খান। অনেক দিন পরে দেখা। আমি ভাল। আপনি ?”এক ঝাঁক হাসি দিল ওসি।
“ভাল। আপনি এখানে?”
“দুটো লাশ পাওয়া গেছে।”
“দুটো! কে কে?” চমকে উঠল সাঈফ।
“সাইমুম ও প্রিংকি। তারা ক্লাসমেড।”
“কি কারণে মারা গেল? কিছু ধারণা করেছেন?”
“না। এখনও কিছু পাওয়া যায়নি।”
“আমি কি এটু ঘুরে দেখতে পারি?”
“অবশ্যই। আপনি তো আমাদেরই লোক।”
সাঈফ বাড়ির ভিতরে গেল। লাশ এখনো সরানো হয়নি। পুলিশ কিছুক্ষণ হল এসেছে। মারা গেছে বেশি সময় হয়নি। দুজনের হাতে দুটি রিভারবার। একজন পুলিশ এসে রিভারবার দুটি নিয়ে গেল। লাশেগুলোর সামনে গেল সাঈফ। সাইমুম সোফাফ বসে আছে। ডান পাশে ঝুলে পরেছে মাথা। মেয়েটার লাশ দরজার দিকে। সাঈফের মনে সন্ধেহ হল। মেয়েটি ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। তখন গুলি করা হয়েছে। তখন ঘরে ঢুকলো ওসি ও কয়েকজন পুলিশ। তারা লাশ দুটি নিয়ে গেল। ওসি কথা বলছে একজন সাংবাদিকের সাথে। হাতে রিভারবারের রির্পোট। সাঈফ ওসির সামনে গেল।
“কি ধারণা করছেন মি.জামান?”ওসিকে প্রশ্ন করল সাঈফ।
“রিপোর্টে দেখে ধারণা করছি। দুজন দুজনকে গুলি করেছে। তবে কি কারণে গুলি করেছে তা জানা যায়নি।”
“কেউ কি দেখেছে গুলি করতে।”
“না।”
“আচ্ছা তাহলে আসি মি. জামান। আবার দেখা হবে।”
“আচ্ছা। সময় পেলে বেড়াতে এসেন।”
বেরিয়ে আসল সাঈফ। দ্রুত চিন্তা করছে। মেয়েটা কেন গুলি করল সাইমুমকে? সাইমুমও সাথে সাথে গুলি করল। সাইমুমও প্রস্তুত ছিল। সাইমুম কি জানত তাকে খুন করতে আসবে মেয়েটি? মেয়েটিকেও বা গুলি করল কেন সাঈমুম? কে আগে গুলি করেছে? সাইমুম? নাকি প্রিংকি? রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছে সাঈফ। রাস্তার পাশে পুলিশের ভ্যান পার্ক করা। হঠাৎ থমকে দাঁড়াল সাঈফ। রাস্তার পাশে গবরের উপর দিয়ে একটি চাকার দাগ। দাগটি এলপাতাঁরি। তাড়াহুরা করে গাড়ী চালানো হয়েছে। সাঈফ পুলিশ ভ্যানের চাকা দেখল। চাকার দাগ মিলেনা। এবুলেন্স তো এখানে পার্ক করা ছিল না। এটি কার গাড়ীর দাগ? উঠে এল সাঈফ। চার পাশে আর কানো গাড়ী নেই। এই খুনের পিছনে কি তৃতীয় কোনো ব্যাক্তি আছে? থাকাটা অস্বাভাবিক না। কিন্তু কে সেই ব্যাক্তি? তাকে কোথায় পাওয়া যাবে? সাইমুমের বাবা-মার সাথে কথা বলতে হবে। সাঈফ আবার বাড়ির ভিতরে ঢুকল। ওসি কামরুজ্জামান বেড়িয়ে আসছে।
“আরে মি. খান। আবার?”
“আসলাম। আচ্ছা সাইমুমের বাবা-মা কোথায়?”
“ভিতরেই আছে। কেন?”
“এটু আলাপ করে আসি। দেখি কিছু পাওয়া যায় কিনা।”
“দেখেন। যদি কিছু পান আমাদের জানিয়েন।”চলে গেল ওসি।
আসল কথা বলল না সাঈফ। ঘরের ভিতরে ঢুকল সাঈফ। বসে আছে সাইমুমের বাবা-মা। মা বসে কাদঁছেন। বাবা কথা বলছে সাংবাদিকদের সাথে। সাংবাদিক না বেড়ানো পযর্ন্ত অপেক্ষা করল সাঈফ। সাইমুমের বাবার পাশে বসে আছে সাঈফ। কথা বলছে সাঈফ।
“আপনি কি কাউকে সন্ধেহ করছেন?” সাইমুমের বাবাকে প্রশ্ন করল সাঈফ।
“জি। সাইমুমের সাথে কিছু বন্ধু বাড়িতে প্রায় আড্ডা দিত। কিন্তু তারা প্রায় কিছু দিন ধরে আর এই বাড়িতে আসে না।”
“তারা কারা?”
“সাইমুম তো বলেছিল ভর্সিটির বন্ধু।”
“আচ্ছা। তাদের ভিতরে কি শিল্পি নামের কোনো মেয়ে ছিল?”
“হ্যা। শিল্পি তো সাইমুমের প্রিয় বন্ধু ছিল। আমার মনে হয় এই তিন জনের খুনিই এক।”
বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে এল সাঈফ। সাঈফ এখানে আসছে। খুনি তা জানতে পেরেছে। তারপর এসে ওদের কে খুন করেছে। মেয়েটি এখানে কি করছিল। সাঈফ আসছে কিভাবে খুনি খবর পেল। তারা কি এখনো ওর উপর নজর রাখছে। কে সে? চারপাশে তাকাল সাঈফ। না কেঊ ওর উপর নজর রাখছে। আশে পাশে কোনো গাড়ী নেই। তাই হেঁটে মেইন রাস্তায় গিয়ে বাসে উঠল।
॥পাঁচ॥
সিঁড়ি দিয়ে উঠছে সাঈফ। একটি কক্ষের সামনে দাঁড়াল। কক্ষের প্রবেশ পথে লেখাটি পড়ল সাঈফ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়(ফাইনাল ইয়ার,বাংলা বিভাগ)। ভিতরে টিচার ক্লাস নিচ্ছে। অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করল সাঈফ।
ছাত্র-ছাত্রীরা সবাইর লক্ষ্য সাঈফ। সাঈফ তার পরিচয় দিল। পরিচয়টি ভূয়া। বলতে শুরু করল সাঈফ।
“আমি একটি ছবি তৈরি করছি। ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল সাইমুমের। কিন্তু তা তো আর হলো না। সাইমুম তার একজন বন্ধুর কথা বলেছিল। আমার ওর নামটা খেয়াল নেই। তোমরা কি বলতে পারবে সে কে? তাকে আমরা নায়ক বানাব।” সাঈফ সকললের মতামত জানতে চায়।
“আমাকে নিলে হয় না।” এক ছেলে দাঁড়িয়ে বলল। তার সাথে সাথে আরও অনেকে দাঁড়াল। সবার এক কথা আমাকে নিলে হয় না।
“না। আমরা সাইমুমকে স্মরনে রাখতে চাই। তাই তার বন্ধুকে নায়ক বানাব। তবে যে ব্যাক্তি ওর সন্ধান দিবে, তাকে আমরা যেকোনা একটি চরিত্র দিতে পারি।”
এক সাথে অনেকে বলে উঠল। একটি নাম। “শান্ত”
“শান্ত কে?”
“আমার মনে হয় ও আমার কথা না। আজাদের কথা বলে গেছে। ও আমার কথা বললে আমাকে বলত।”একটি ছেলে উঠে দাঁড়াল। সে চোখ সোজা করছে না।
“আচ্ছা। আজাদকে কোথায় পাওয়া যাবে?
“ও ক্যাম্পাস ক্যান্টিনে আছে। ওর নাম্বার হচ্ছে ০১৯৩......৬১।”
নাম্বারটা লিখে নিল সাঈফ। তারপর ধন্যবাদ দিয়ে বেড়িয়ে এল বাহিরে। সিঁিড়তে একজনের কাছে জিজ্ঞাসা করল। ক্যান্টিনের অবস্থান জানতে। সিঁিড় দিয়ে নেমে বায়ে মোঁড় ঘুরল সাঈফ। সিঁড়ির নিচে একটি গাড়ী দাঁড় করানো। চাকায় গবর লেগে আছে। এবং এই চাকার দাগ সাঈফ গবরের উপরে দেখে ছিল। পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফোন করল। ফোন ধরল কনেস্টবল।
“হ্যালো। কে বলছেন?”
“আমি সাঈফ খান। ফোনটা দারোগাকে দাও।”
“হ্যালো। বলেন স্যার। কিছুক্ষণ পর উত্তর দিল দারোগা মেহেদী হাসান।
“আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোর্স পাঠান। আর পারলে আপনিও চলে আসেন। শিল্পির খুনি এখন হাতের নাগালে।” কেটে দিল লাইন সাঈফ।
গাড়ীর কাছে গেল সাঈফ। খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে গাড়ীর চাকা। প্রহরী এসে ডাক দিল।
“এই যে স্যার কি করতাছেন?”
“তুমি এখানকার প্রহরী?”
“জি। হ।”
“আচ্ছা তুমি বলতে পারবে এই গাড়ীটা কার? ”
“জানমু না ক্যান। এখানে এই গাড়ী ছাড়া, আর কোনো গাড়ী থাকে না। এই গাড়ী শান্ত ভাইয়ের।”
“শান্ত ভাই কে?”
“ফাইনাল ইয়ারের শান্ত ভাই।”
প্রহরীকে বিদায় করে সাঈফ চলে এল সিঁড়ির গোড়ায়। ঠিক তখনি পুলিশের গাড়ী নিয়ে ঢুকল দারোগা মেহেদী হাসান। সাঈফ দাঁড়ালো ওদের জন্য। দারোগা গাড়ী থেকে নেমে চলে এল সাঈফের সামনে।
“কোথায় স্যার?”
“আছে। আমার পিছনে পিছনে থকবেন। আমি ভিতরে ঢুকলে আপনি এটু পরে ঢুকবেন। আসামী পলাতে পারে।”
“ও কে স্যার।”
সাঈফ উপরে উঠে গেল। পিছনে দারোগা। অনুমতি ছাড়াই ক্লাসে দিয়ে ঢুকে পড়ল সাঈফ। সবাই উঠে দাঁড়াল। সবাই তাকিয়ে আছে সাঈফের দিকে। সবাই মার মুখ হয়ে উঠেছে। টিচারকে অপমান করার জন্য।
“থামো গর্দবের দল।” চেঁচিয়ে এক ধমক দিল সাঈফ। সবাই তাতে চুপ হয়ে গেল।
“মি.শান্ত। বাহিরে যে সাদা টয়টো গাড়ী পার্ক করা। গাড়ীটা কি আজাদের?”
সাঈফ গাড়ীর কথা বলতেই উঠে দৌড় দিল শান্ত। কিন্তু পারলনা পালাতে। গেটের পাশে ওরই জন্য অপেক্ষা করছিল দারোগা মেহেদী হাসান। ধরে ফেলল সে শান্তকে। তারপর ক্ষান্ত হননি শান্ত। অনেক চেষ্টা করেছে পালাতে। কিন্তু পারেনি। আহত করেছে দুজন পুলিশকে। তাদের ভিতরে একজন দারোগা মেহেদী হাসান। বাহিরে এল সাঈফ দুটো ঘুসি মারল শান্তে নাকে। অজ্ঞান হয়ে গেল শান্ত। শান্তের দেহটা ধরে ফেল সাঈফ। শুয়ে দিল মাটিতে। চারপাশে ভিড় জমে গেছে। সাঈফ তা ঠেলে বাহিরে এল। বসে আছে দারোগা। তারও নাকে লেগেছে। সাঈফকে দেখে উঠে দাঁড়ালো।
“কি মি.হাসান ঠিক আছেন তো ?”
“জি স্যার। সব ঠিক। সরি স্যার।”
“কেন?”
“আপনাকে আমি চেনতে ভূল করেছি। আমি আসলে বুঝতে পারিনি আপনি এত ডেঞ্জারাস ডিটেকটিভ। কত পতিভা আপনার। আর আমি কিনা......।”
“আচ্ছা। এটা কোনো সমস্যাই না। এটা হয়। মাঝে মাঝে আমারও হয়। আসামি পেয়ে গেছেন। তাহলে এবার আমি আসি।”
“জি আচ্ছা। আবার আসবেন স্যার।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এল সাঈফ। নিচে এসে উপরে তাকাল । এখন ওর পথের দিকে তাকিয়ে আছে দারোগা মেহেদী হাসান।
পুলিশ ভ্যান ও এমবুলেন্স পিছনে রিক্সা থামাল সাঈফ। ভাড়া মিটিয়ে পুলিশ ভ্যানের কাছে এল সাঈফ। সাঈফের মনে চিলিক দিয়ে উঠল। এখানে পুলিশ ভ্যান কেন? সাইমুম কি তাহলে ধরা খেয়ে গেল? না আবার এমবুলেন্স? নাকি সুইসাইড করল। রমনা থানার কর্মকর্তা ওসি কামরুজ্জামান দাঁড়িয়ে আছে। ওসির সামনে গেল সাঈফ।
“হ্যালো ওসি সাহেব। কেমন আছেন?” কামরুজ্জামান ও সাঈদ আগে থেকেই পরিচিত।
“আরে মি.খান। অনেক দিন পরে দেখা। আমি ভাল। আপনি ?”এক ঝাঁক হাসি দিল ওসি।
“ভাল। আপনি এখানে?”
“দুটো লাশ পাওয়া গেছে।”
“দুটো! কে কে?” চমকে উঠল সাঈফ।
“সাইমুম ও প্রিংকি। তারা ক্লাসমেড।”
“কি কারণে মারা গেল? কিছু ধারণা করেছেন?”
“না। এখনও কিছু পাওয়া যায়নি।”
“আমি কি এটু ঘুরে দেখতে পারি?”
“অবশ্যই। আপনি তো আমাদেরই লোক।”
সাঈফ বাড়ির ভিতরে গেল। লাশ এখনো সরানো হয়নি। পুলিশ কিছুক্ষণ হল এসেছে। মারা গেছে বেশি সময় হয়নি। দুজনের হাতে দুটি রিভারবার। একজন পুলিশ এসে রিভারবার দুটি নিয়ে গেল। লাশেগুলোর সামনে গেল সাঈফ। সাইমুম সোফাফ বসে আছে। ডান পাশে ঝুলে পরেছে মাথা। মেয়েটার লাশ দরজার দিকে। সাঈফের মনে সন্ধেহ হল। মেয়েটি ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। তখন গুলি করা হয়েছে। তখন ঘরে ঢুকলো ওসি ও কয়েকজন পুলিশ। তারা লাশ দুটি নিয়ে গেল। ওসি কথা বলছে একজন সাংবাদিকের সাথে। হাতে রিভারবারের রির্পোট। সাঈফ ওসির সামনে গেল।
“কি ধারণা করছেন মি.জামান?”ওসিকে প্রশ্ন করল সাঈফ।
“রিপোর্টে দেখে ধারণা করছি। দুজন দুজনকে গুলি করেছে। তবে কি কারণে গুলি করেছে তা জানা যায়নি।”
“কেউ কি দেখেছে গুলি করতে।”
“না।”
“আচ্ছা তাহলে আসি মি. জামান। আবার দেখা হবে।”
“আচ্ছা। সময় পেলে বেড়াতে এসেন।”
বেরিয়ে আসল সাঈফ। দ্রুত চিন্তা করছে। মেয়েটা কেন গুলি করল সাইমুমকে? সাইমুমও সাথে সাথে গুলি করল। সাইমুমও প্রস্তুত ছিল। সাইমুম কি জানত তাকে খুন করতে আসবে মেয়েটি? মেয়েটিকেও বা গুলি করল কেন সাঈমুম? কে আগে গুলি করেছে? সাইমুম? নাকি প্রিংকি? রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছে সাঈফ। রাস্তার পাশে পুলিশের ভ্যান পার্ক করা। হঠাৎ থমকে দাঁড়াল সাঈফ। রাস্তার পাশে গবরের উপর দিয়ে একটি চাকার দাগ। দাগটি এলপাতাঁরি। তাড়াহুরা করে গাড়ী চালানো হয়েছে। সাঈফ পুলিশ ভ্যানের চাকা দেখল। চাকার দাগ মিলেনা। এবুলেন্স তো এখানে পার্ক করা ছিল না। এটি কার গাড়ীর দাগ? উঠে এল সাঈফ। চার পাশে আর কানো গাড়ী নেই। এই খুনের পিছনে কি তৃতীয় কোনো ব্যাক্তি আছে? থাকাটা অস্বাভাবিক না। কিন্তু কে সেই ব্যাক্তি? তাকে কোথায় পাওয়া যাবে? সাইমুমের বাবা-মার সাথে কথা বলতে হবে। সাঈফ আবার বাড়ির ভিতরে ঢুকল। ওসি কামরুজ্জামান বেড়িয়ে আসছে।
“আরে মি. খান। আবার?”
“আসলাম। আচ্ছা সাইমুমের বাবা-মা কোথায়?”
“ভিতরেই আছে। কেন?”
“এটু আলাপ করে আসি। দেখি কিছু পাওয়া যায় কিনা।”
“দেখেন। যদি কিছু পান আমাদের জানিয়েন।”চলে গেল ওসি।
আসল কথা বলল না সাঈফ। ঘরের ভিতরে ঢুকল সাঈফ। বসে আছে সাইমুমের বাবা-মা। মা বসে কাদঁছেন। বাবা কথা বলছে সাংবাদিকদের সাথে। সাংবাদিক না বেড়ানো পযর্ন্ত অপেক্ষা করল সাঈফ। সাইমুমের বাবার পাশে বসে আছে সাঈফ। কথা বলছে সাঈফ।
“আপনি কি কাউকে সন্ধেহ করছেন?” সাইমুমের বাবাকে প্রশ্ন করল সাঈফ।
“জি। সাইমুমের সাথে কিছু বন্ধু বাড়িতে প্রায় আড্ডা দিত। কিন্তু তারা প্রায় কিছু দিন ধরে আর এই বাড়িতে আসে না।”
“তারা কারা?”
“সাইমুম তো বলেছিল ভর্সিটির বন্ধু।”
“আচ্ছা। তাদের ভিতরে কি শিল্পি নামের কোনো মেয়ে ছিল?”
“হ্যা। শিল্পি তো সাইমুমের প্রিয় বন্ধু ছিল। আমার মনে হয় এই তিন জনের খুনিই এক।”
বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে এল সাঈফ। সাঈফ এখানে আসছে। খুনি তা জানতে পেরেছে। তারপর এসে ওদের কে খুন করেছে। মেয়েটি এখানে কি করছিল। সাঈফ আসছে কিভাবে খুনি খবর পেল। তারা কি এখনো ওর উপর নজর রাখছে। কে সে? চারপাশে তাকাল সাঈফ। না কেঊ ওর উপর নজর রাখছে। আশে পাশে কোনো গাড়ী নেই। তাই হেঁটে মেইন রাস্তায় গিয়ে বাসে উঠল।
॥পাঁচ॥
সিঁড়ি দিয়ে উঠছে সাঈফ। একটি কক্ষের সামনে দাঁড়াল। কক্ষের প্রবেশ পথে লেখাটি পড়ল সাঈফ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়(ফাইনাল ইয়ার,বাংলা বিভাগ)। ভিতরে টিচার ক্লাস নিচ্ছে। অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করল সাঈফ।
ছাত্র-ছাত্রীরা সবাইর লক্ষ্য সাঈফ। সাঈফ তার পরিচয় দিল। পরিচয়টি ভূয়া। বলতে শুরু করল সাঈফ।
“আমি একটি ছবি তৈরি করছি। ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল সাইমুমের। কিন্তু তা তো আর হলো না। সাইমুম তার একজন বন্ধুর কথা বলেছিল। আমার ওর নামটা খেয়াল নেই। তোমরা কি বলতে পারবে সে কে? তাকে আমরা নায়ক বানাব।” সাঈফ সকললের মতামত জানতে চায়।
“আমাকে নিলে হয় না।” এক ছেলে দাঁড়িয়ে বলল। তার সাথে সাথে আরও অনেকে দাঁড়াল। সবার এক কথা আমাকে নিলে হয় না।
“না। আমরা সাইমুমকে স্মরনে রাখতে চাই। তাই তার বন্ধুকে নায়ক বানাব। তবে যে ব্যাক্তি ওর সন্ধান দিবে, তাকে আমরা যেকোনা একটি চরিত্র দিতে পারি।”
এক সাথে অনেকে বলে উঠল। একটি নাম। “শান্ত”
“শান্ত কে?”
“আমার মনে হয় ও আমার কথা না। আজাদের কথা বলে গেছে। ও আমার কথা বললে আমাকে বলত।”একটি ছেলে উঠে দাঁড়াল। সে চোখ সোজা করছে না।
“আচ্ছা। আজাদকে কোথায় পাওয়া যাবে?
“ও ক্যাম্পাস ক্যান্টিনে আছে। ওর নাম্বার হচ্ছে ০১৯৩......৬১।”
নাম্বারটা লিখে নিল সাঈফ। তারপর ধন্যবাদ দিয়ে বেড়িয়ে এল বাহিরে। সিঁিড়তে একজনের কাছে জিজ্ঞাসা করল। ক্যান্টিনের অবস্থান জানতে। সিঁিড় দিয়ে নেমে বায়ে মোঁড় ঘুরল সাঈফ। সিঁড়ির নিচে একটি গাড়ী দাঁড় করানো। চাকায় গবর লেগে আছে। এবং এই চাকার দাগ সাঈফ গবরের উপরে দেখে ছিল। পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফোন করল। ফোন ধরল কনেস্টবল।
“হ্যালো। কে বলছেন?”
“আমি সাঈফ খান। ফোনটা দারোগাকে দাও।”
“হ্যালো। বলেন স্যার। কিছুক্ষণ পর উত্তর দিল দারোগা মেহেদী হাসান।
“আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোর্স পাঠান। আর পারলে আপনিও চলে আসেন। শিল্পির খুনি এখন হাতের নাগালে।” কেটে দিল লাইন সাঈফ।
গাড়ীর কাছে গেল সাঈফ। খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে গাড়ীর চাকা। প্রহরী এসে ডাক দিল।
“এই যে স্যার কি করতাছেন?”
“তুমি এখানকার প্রহরী?”
“জি। হ।”
“আচ্ছা তুমি বলতে পারবে এই গাড়ীটা কার? ”
“জানমু না ক্যান। এখানে এই গাড়ী ছাড়া, আর কোনো গাড়ী থাকে না। এই গাড়ী শান্ত ভাইয়ের।”
“শান্ত ভাই কে?”
“ফাইনাল ইয়ারের শান্ত ভাই।”
প্রহরীকে বিদায় করে সাঈফ চলে এল সিঁড়ির গোড়ায়। ঠিক তখনি পুলিশের গাড়ী নিয়ে ঢুকল দারোগা মেহেদী হাসান। সাঈফ দাঁড়ালো ওদের জন্য। দারোগা গাড়ী থেকে নেমে চলে এল সাঈফের সামনে।
“কোথায় স্যার?”
“আছে। আমার পিছনে পিছনে থকবেন। আমি ভিতরে ঢুকলে আপনি এটু পরে ঢুকবেন। আসামী পলাতে পারে।”
“ও কে স্যার।”
সাঈফ উপরে উঠে গেল। পিছনে দারোগা। অনুমতি ছাড়াই ক্লাসে দিয়ে ঢুকে পড়ল সাঈফ। সবাই উঠে দাঁড়াল। সবাই তাকিয়ে আছে সাঈফের দিকে। সবাই মার মুখ হয়ে উঠেছে। টিচারকে অপমান করার জন্য।
“থামো গর্দবের দল।” চেঁচিয়ে এক ধমক দিল সাঈফ। সবাই তাতে চুপ হয়ে গেল।
“মি.শান্ত। বাহিরে যে সাদা টয়টো গাড়ী পার্ক করা। গাড়ীটা কি আজাদের?”
সাঈফ গাড়ীর কথা বলতেই উঠে দৌড় দিল শান্ত। কিন্তু পারলনা পালাতে। গেটের পাশে ওরই জন্য অপেক্ষা করছিল দারোগা মেহেদী হাসান। ধরে ফেলল সে শান্তকে। তারপর ক্ষান্ত হননি শান্ত। অনেক চেষ্টা করেছে পালাতে। কিন্তু পারেনি। আহত করেছে দুজন পুলিশকে। তাদের ভিতরে একজন দারোগা মেহেদী হাসান। বাহিরে এল সাঈফ দুটো ঘুসি মারল শান্তে নাকে। অজ্ঞান হয়ে গেল শান্ত। শান্তের দেহটা ধরে ফেল সাঈফ। শুয়ে দিল মাটিতে। চারপাশে ভিড় জমে গেছে। সাঈফ তা ঠেলে বাহিরে এল। বসে আছে দারোগা। তারও নাকে লেগেছে। সাঈফকে দেখে উঠে দাঁড়ালো।
“কি মি.হাসান ঠিক আছেন তো ?”
“জি স্যার। সব ঠিক। সরি স্যার।”
“কেন?”
“আপনাকে আমি চেনতে ভূল করেছি। আমি আসলে বুঝতে পারিনি আপনি এত ডেঞ্জারাস ডিটেকটিভ। কত পতিভা আপনার। আর আমি কিনা......।”
“আচ্ছা। এটা কোনো সমস্যাই না। এটা হয়। মাঝে মাঝে আমারও হয়। আসামি পেয়ে গেছেন। তাহলে এবার আমি আসি।”
“জি আচ্ছা। আবার আসবেন স্যার।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এল সাঈফ। নিচে এসে উপরে তাকাল । এখন ওর পথের দিকে তাকিয়ে আছে দারোগা মেহেদী হাসান।
1 Comments
nice
ReplyDelete